004746
Total Users : 4746
Charbak magazine logo
sorolrekha logo

লেখক তালিকা

জন্ম. ২৩ নভেম্বর ১৯৭৫, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানে। সম্পাদনা করছেন ‘চারবাক’ ও ‘সরলরেখা’। যুক্ত আছেন সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা ‘শুক্কুরবারের আড্ডা’র সাথে। লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহ ও প্রদর্শন কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: মায়াহরিণ, কাব্যগ্রন্থ ২০০৮, চারবাক, বুদ্ধিজীবীর দায়ভার, সম্পাদনা ২০০৯, সংবেদ, পক্ষ—প্রতিপক্ষ অথবা শত্রু—মিত্র, প্রবন্ধ ২০১০, চারবাক, নির্বাচিত চারবাক, সম্পাদনা ২০১১, চারবাক, নাচঘর, কবিতা, ২০১২, চারবাক, ভাষা সাম্প্রদায়িকতা অথবা সাম্রাজ্যবাদি খপ্পর, প্রবন্ধ, ২০১৩, চারবাক এবং মুখোশ, কবিতা, ২০১৬, চারবাক, করোনাকালে, কবিতা, ২০২২, চারবাক।
View Posts →
কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
View Posts →
প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ
View Posts →
বাংলাদেশের উত্তরউপনিবেশি ভাবচর্চার পথিকৃৎ ফয়েজ আলম একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। উপনিবেশি শাসন-শোষণ আর তার পরিণাম, রাষ্ট্র ও সমধর্মী মেল কর্তৃক ব্যক্তির উপর শোষণ-নিপীড়ন ও ক্ষমতার নানামুখি প্রকাশ আর এসবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে লিখছেন তিনি। বিশ্বায়নের নামে পশ্চিমের নয়াউপনিবেশি আর্থ-সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আর রাষ্ট্র ও স্বার্থকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর শোষণচক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার লেখা আমাদের উদ্দীপ্ত আর সাহসী করে তোলে। রুহানিয়াত সমৃদ্ধ দার্শনিক ভাবচর্চা আর সাহিত্যিক-রাজনৈতিক তত্ত্বচর্চাকে একসাথে কবিতার দেহে ধারণ করতে সক্ষম ফয়েজ আলমের সহজিয়া কবিতা। তার কবিতায় তিনি মানুষের প্রাত্যহিক মুখের ভাষার প্রতি উন্মুক্ত। যে ভাষাকে আমরা ব্রাত্য বানিয়ে রেখেছি একেই তিনি জায়গা করে দিয়েছেন কবিতায়। তাই প্রচলিত কাব্যভাষা থেকে তার কবিতার ভাষা ভিন্ন। বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি এ ভাষাকেই বলেছেন মান কথ্যবাংলা, আঞ্চলিকতার বাইরে সর্বাঞ্চলীয় বাঙালির প্রতিদিনের মুখের ভাষা। কবিতাগুলো কখনো কখনো বিভিন্ন ধ্বনি ও শব্দে বেশি বা কম জোর দিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে পারে, যেভাবে আমরা হয়তো আড্ডার সময় কথা বলি। এবং তা একই সাথে বক্তব্যের অতিরিক্ত ভাষারও অভিজ্ঞতা। খোদ ‘আওয়াজের সাথে ইশক’ যেন। প্রাণের আকুতি ও চঞ্চলতার সাথে তাই শূন্যতাও হাজির আছে। সেই সাথে জারি আছে ‘শব্দের দিলের ভিতরে আরো শব্দের আশা’। ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে, নেত্রকোনা জেলার আটপাড়ার যোগীরনগুয়া গ্রামে। বাবা মরহুম শেখ আবদুস সামাদ, মা সামসুন্নাহার খানম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) ও এমএ পাশ করার পর প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণার জন্য এমফিল. ডিগ্রী লাভ করেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ: ব্যক্তির মৃত্যু ও খাপ-খাওয়া মানুষ (কবিতা, ১৯৯৯); প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি ( গবেষণা, ২০০৪); এডওয়ার্ড সাইদের অরিয়েন্টালিজম (অনুবাদ, ২০০৫); উত্তর-উপনিবেশি মন (প্রবন্ধ, ২০০৬); কাভারিং ইসলাম (অনুবাদ, ২০০৬), ভাষা, ক্ষমতা ও আমাদের লড়াই প্রসঙ্গে (প্রবন্ধ, ২০০৮); বুদ্ধিজীবী, তার দায় ও বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব (প্রবন্ধ, ২০১২), জলছাপে লেখা (কবিতা, ২০২১), রাইতের আগে একটা গান (কবিতা, ২০২২); ভাষার উপনিবেশ: বাংলা ভাষার রূপান্তরের ইতিহাস (প্রবন্ধ, ২০২২)।
View Posts →
কবি ও গল্পকার। যুক্ত আছেন চারবাক সম্পাদনা পরিবারের সাথে।
View Posts →
কবি। জন্ম মৌলভীবাজার জেলায়।
View Posts →
প্রাবন্ধিক। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে প্রান্তীয় কৃষক-মধুচাষি, বেতবাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন নিয়ে কাজ করছেন।
View Posts →

সম্পূর্ণ লেখক তালিকা

আনোয়ার কামাল এর কবিতা

যে যুবক ঘুমিয়ে আছে

যে যুবক ঘুমিয়ে আছে
নেশার ঘোরে কিংবা অন্তর্জালে
সভ্যতার অবিনাশী গান
তার কানে তুলে দাও।
পরম মমতায় তার হাতে তুলে দাও-
মরণজয়ী চেতনার ঝান্ডা

যে যুবক ঘুমিয়ে আছে-
ঘুমের ঘোরে সে যেন ভুলে না যায়
যুবক অর্থ- অনন্ত অসীম ছুঁয়ে দেখা
যুবক অর্থ- অচেনাকে চিনে নেওয়া
যুবক অর্থ- অন্যায়ের মুখে দাঁড়িয়ে
অসহায় মানুষের পাশে অবিনাশী গান-
অনন্ত অসীমে জেগে থাকা
পদাঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ করে বের হওয়া
যুবক অর্থ- দুর্গত বানভাসী মানুষের
পাশে দাঁড়িয়ে আর্তসেবা করা
যুবক অর্থ- দেশ গড়ায় নিজেকে
সীমাহীন ত্যাগী হওয়া।

যে যুবক ঘুমিয়ে আছে
তাকে জাগাও
তার কানে মন্ত্র দাও-
সমাজ পরিবর্তনের
অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্রে
তাকে জাগাও; তার বুকে-
দ্রোহের অগ্নিশিখা জ্বেলে দাও…

জীবনের খন্ডিত মৃত্যু

[জীবনানন্দ দাশ শ্রদ্ধাষ্পদেষু]

সময়ের সেতু পথ ধরে ধরে
যতিহীন শতাব্দীর সূর্য রাত্রি নক্ষত্র
মাঘসংক্রান্তির রাতে
অন্ধকার থেকে সময়ের তীরে
চারিদিকে প্রকৃতির প্রেম নিয়ে
মাঠের গল্প গান শোনাবে বলে
ছায়া আবছায়ায় পরস্পর-
আলেয়ায় পিপাসার গান হয়ে তোমাকে
ক্যাম্পে প্রেম নিবেদন করে-

সুরঞ্জনা- কথা দাও
অঘ্রান প্রান্তরে অন্ধকার থেকে
একটি প্রেমের কবিতা অবসরে-
মৃত্যুর আগে অনেক নদীর জল
হাজার বছর শুধু বোধ জন্মায়

অবেলায় খেলা করে
জীবনের খন্ডিত মৃত্যু

 

এবাদত

কবিতা লেখাই আমার এবাদত।

আমি একটি কবিতা লিখলেই-
আমার এক ওয়াক্ত এবাদত হয়ে যায়
আমি একটি কবিতার জন্য
এক ওয়াক্ত এবাদতের জন্য
নিসর্গ নিমগ্ন থাকি।

আমার মানসলোকে বহুকৌণিক আলো
বিচ্ছুরিত হয়
ধ্যানে কবিতার পঙ্ক্তিমালায় তসবি জপি
আমি যতই ধ্যানস্থ হই- ঈশ্বর প্রেমে মজি
কবিতার সরস বাক্যে ঊষর মাটি সুধাময় হয়
আমি ধ্যানস্থ হই আর কবিতায় তসবি জপি।

ঈশ্বর ধ্যানে প্রকৃতি যুক্ত হয়, প্রেম যুক্ত হয়
প্রেমের রসায়নে আমি সিক্ত হই, ভুলে যাই
জাগতিক চারপাশ; আমি আমাতে লীন হয়ে যাই।

জেগে ওঠো সতর্ক প্রহরা দাও

এখন চারদিকে সতর্ক প্রহরা দাও-
নইলে দেখবে- তারা সব কিছু
খুবলে খেয়ে নেবে-
দখলে নিতে চাইবে কিশোরীর শরীর
এক এক করে খুলে ফেলবে সবকটা কপাট
পৃথিবীর সব কিছু দখলে নিতে চায়!
ওরা কারা?
কারা ওদের মাথায় হাত রাখে?

সবাই জেগে ওঠো-
একটা সতর্ক প্রহরা চাই
চাই একটা ঝাঁকুনি
প্রলম্বিত শাখাগুলো
এখনই ছেটে দেওয়ার সময়

এখনই জেগে ওঠার সময়
চারদিকে সতর্ক প্রহরা দাও…

পোয়াতি ধানের সাথে সখ্য

আমার বাবা-দাদা কিংবা নানা
কেউ কৃষক ছিল না; তবে তাদের ধানি জমি ছিল
সেখানে ফসল ফলতো আর ধানের মৌ মৌ গন্ধে
পুরো উঠোন ভরে যেত।

আমার বাবা কৃষক ছিল না-
তবে আমাকে নিয়ে ধানি জমিতে কাজ করেছেন
ধানি জমিতে ধানের চারা রোপন করেছি
আগাছা উপড়ে ফেলেছি; সার-কীটনাশক ছিটিয়েছি,
শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়েছি।
ধানি মাঠের আলপথে বসে খোলা আকাশে
দুপুরের খাবার খেয়েছি-
লাঙ্গলেরমুঠ চেপে ধরেছি রুখু জমিতে।
আমার বাবা কৃষক ছিল না-
তবে আমি কৃষকের কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি।

 

ঈর্ষা

ঈর্ষার অনলে ভূমি পুড়ে সর্বনাশ
মাটির শরীর যেন কমলা রোদ্দুর
মনের গহিন স্বপ্নে নীল রাত্রিবাস
নিজের অপারগতা এক সমুদ্দুর।

নিজ নাক কেটে পর যাত্রা করো ভঙ্গ
এ কেবল অভিমান ব্যর্থতার কলি
মনের অনলে জ্বালো জীর্ণ নিজ অঙ্গ
বোশেখি প্রেমের শত ঝরা পদাবলি।

মানবিক পৃথিবীর সোনালি আকাশ
ঝরে পড়ে বেদনায় বক্ষ পুনর্বার
ভালোবাসা মেদুরতা ছড়ায় সুবাস
ভাবনায় জমে থাকে গাঢ় অন্ধকার।

যতটা রেখেছো মনে সঞ্চিত আগুন
এলোকেশী বারবার করেছো তো খুন।

 

এখনও শুনতে পাই

তার সাথে পথেই দেখা হয়েছিল
হয়তো কোনো জনাকীর্ণ রাজপথে-
এখন সে কথা আর মনে পড়ে না
শুধু মনে পড়ে লোকটি মন্ত্রের মতো
কিছু বাক্য উচ্চারণ করে দ্রুত চলে যায়

আমি আজও লোকটিকে খুঁজে ফিরি
আজও তার যাদুমন্ত্র কানে বাজে…

যে যুবক একাত্তর দেখেনি

কারা যেন গতরাতে আমার কানের কাছে
চুপিসারে বলে গেল-
বিজয়ের মাসে একবার-
শুধু আর একবার জ্বলে ওঠো-
বিজয় নিশান তুলে ধরো।

বুকের ভেতর যে তাজা গ্রেনেড উসখুস করছে
তাকে সঠিক নিশানায় ছুঁড়ে দাও।

যে যুবক একাত্তর দেখেনি-
তাকে সঠিক পথের দিশা বলে দাও
তার এখন সামনে বাড়ার সময়
তার হাতে তুলে দাও লাল-সবুজের পতাকা।

বাস্তুভিটা

বাসুদেব পোড়া বাস্তুভিটায় নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে
উঠোনে বৃদ্ধা মা, প্রিয়তম স্ত্রী আর দুই ছেলে
তারাও বাকরুদ্ধ। বাস্তুভিটা থেকে এখনও মিনমিনে তাপে
ধোঁয়ার কুন্ডলী পাকিয়ে আকাশে নালিশ করতে উড়ে যাচ্ছে।
আমরা সমবেত হয়েছি- ওদের সমবেদনা জানাতে।

বাসুদেব জানে- যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারাও আসবে-
জানাবে সমবেদনা; আর অচিরেই তাকে
অজানায় পাড়ি দিতে হবে।

বাসুদেব আসে বাসুদেব যায়, পথের নিশানা তার
জানা নেই। জানা নেই, কার কাছে নালিশ করবে!
তবু বাসুদেবরা জেগে থাকে অসীম সাহস বুকে বেঁধে।

ফেরারি

কালের কলস থেকে
কবিতার নিখোঁজ শব্দগুলো
পথহারা পাখির ঝরা পালক হয়ে
ফেরি করে যত্রতত্র
প্রিয়জনেষু খুঁজে বেড়ায়
চিরচেনা ধূসর মুখ

কবিতার লিরিকে
বিন্দু বিন্দু শিশির জমে
নিজেকে নিজের কাছে লুকিয়ে রাখি
নৈঃশব্দ্য রাত্রিদিন।

শেয়ার করুন: