004744
Total Users : 4744
Charbak magazine logo
sorolrekha logo

লেখক তালিকা

জন্ম. ২৩ নভেম্বর ১৯৭৫, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানে। সম্পাদনা করছেন ‘চারবাক’ ও ‘সরলরেখা’। যুক্ত আছেন সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা ‘শুক্কুরবারের আড্ডা’র সাথে। লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহ ও প্রদর্শন কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: মায়াহরিণ, কাব্যগ্রন্থ ২০০৮, চারবাক, বুদ্ধিজীবীর দায়ভার, সম্পাদনা ২০০৯, সংবেদ, পক্ষ—প্রতিপক্ষ অথবা শত্রু—মিত্র, প্রবন্ধ ২০১০, চারবাক, নির্বাচিত চারবাক, সম্পাদনা ২০১১, চারবাক, নাচঘর, কবিতা, ২০১২, চারবাক, ভাষা সাম্প্রদায়িকতা অথবা সাম্রাজ্যবাদি খপ্পর, প্রবন্ধ, ২০১৩, চারবাক এবং মুখোশ, কবিতা, ২০১৬, চারবাক, করোনাকালে, কবিতা, ২০২২, চারবাক।
View Posts →
কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
View Posts →
প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ
View Posts →
বাংলাদেশের উত্তরউপনিবেশি ভাবচর্চার পথিকৃৎ ফয়েজ আলম একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। উপনিবেশি শাসন-শোষণ আর তার পরিণাম, রাষ্ট্র ও সমধর্মী মেল কর্তৃক ব্যক্তির উপর শোষণ-নিপীড়ন ও ক্ষমতার নানামুখি প্রকাশ আর এসবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে লিখছেন তিনি। বিশ্বায়নের নামে পশ্চিমের নয়াউপনিবেশি আর্থ-সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আর রাষ্ট্র ও স্বার্থকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর শোষণচক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার লেখা আমাদের উদ্দীপ্ত আর সাহসী করে তোলে। রুহানিয়াত সমৃদ্ধ দার্শনিক ভাবচর্চা আর সাহিত্যিক-রাজনৈতিক তত্ত্বচর্চাকে একসাথে কবিতার দেহে ধারণ করতে সক্ষম ফয়েজ আলমের সহজিয়া কবিতা। তার কবিতায় তিনি মানুষের প্রাত্যহিক মুখের ভাষার প্রতি উন্মুক্ত। যে ভাষাকে আমরা ব্রাত্য বানিয়ে রেখেছি একেই তিনি জায়গা করে দিয়েছেন কবিতায়। তাই প্রচলিত কাব্যভাষা থেকে তার কবিতার ভাষা ভিন্ন। বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি এ ভাষাকেই বলেছেন মান কথ্যবাংলা, আঞ্চলিকতার বাইরে সর্বাঞ্চলীয় বাঙালির প্রতিদিনের মুখের ভাষা। কবিতাগুলো কখনো কখনো বিভিন্ন ধ্বনি ও শব্দে বেশি বা কম জোর দিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে পারে, যেভাবে আমরা হয়তো আড্ডার সময় কথা বলি। এবং তা একই সাথে বক্তব্যের অতিরিক্ত ভাষারও অভিজ্ঞতা। খোদ ‘আওয়াজের সাথে ইশক’ যেন। প্রাণের আকুতি ও চঞ্চলতার সাথে তাই শূন্যতাও হাজির আছে। সেই সাথে জারি আছে ‘শব্দের দিলের ভিতরে আরো শব্দের আশা’। ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে, নেত্রকোনা জেলার আটপাড়ার যোগীরনগুয়া গ্রামে। বাবা মরহুম শেখ আবদুস সামাদ, মা সামসুন্নাহার খানম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) ও এমএ পাশ করার পর প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণার জন্য এমফিল. ডিগ্রী লাভ করেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ: ব্যক্তির মৃত্যু ও খাপ-খাওয়া মানুষ (কবিতা, ১৯৯৯); প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি ( গবেষণা, ২০০৪); এডওয়ার্ড সাইদের অরিয়েন্টালিজম (অনুবাদ, ২০০৫); উত্তর-উপনিবেশি মন (প্রবন্ধ, ২০০৬); কাভারিং ইসলাম (অনুবাদ, ২০০৬), ভাষা, ক্ষমতা ও আমাদের লড়াই প্রসঙ্গে (প্রবন্ধ, ২০০৮); বুদ্ধিজীবী, তার দায় ও বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব (প্রবন্ধ, ২০১২), জলছাপে লেখা (কবিতা, ২০২১), রাইতের আগে একটা গান (কবিতা, ২০২২); ভাষার উপনিবেশ: বাংলা ভাষার রূপান্তরের ইতিহাস (প্রবন্ধ, ২০২২)।
View Posts →
কবি ও গল্পকার। যুক্ত আছেন চারবাক সম্পাদনা পরিবারের সাথে।
View Posts →
কবি। জন্ম মৌলভীবাজার জেলায়।
View Posts →
প্রাবন্ধিক। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে প্রান্তীয় কৃষক-মধুচাষি, বেতবাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন নিয়ে কাজ করছেন।
View Posts →

সম্পূর্ণ লেখক তালিকা

কাব্যগ্রন্থ: করোনাকালে

মুখায়ব

মুখায়বে খেলা করে অন্য মানুষ
চাক চাক করে কেটে ফেললে নিজেকে
অসংখ্য সত্তা দেয়ালে আঁকা হয়
বিন্দু বিন্দু ঘাম আর বীর্যের খেলা
বিষের বাঁশি বাজায়; নির্মেদ একখণ্ড জীবনী
জীবন্ত একটা মানুষ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে
কেবলই নেচে যায়
দ্রোহের না অশ্বখুড়ের প্রতিধ্বনি
টের পাওয়া যায় কখনো কখনো

বিপ্লবের চুপসে পড়া ফানুসটা
কেউ একজন আমাকে ধরিয়ে দিয়ে
লাপাত্তা… লাপাত্তা… তারপর
শুনেনি কেউ কখনো সেই সুর-ইন্দ্রজাল
রুদ্রপ্রলয়, ইশ্বরকোরাস
থেমে থাকে না কিছুই
কিছু কিছু শব্দ উলোটপালোট হয় শুধু
শেষ পর্যন্ত
এই যা…

২৯ অক্টোবর ২০১৬

প্রজাপতি

শহরময় প্রজাপতির মৃত শরীর
ছড়িয়ে ছিটিয়ে
হাজার নয় লক্ষাধিক
আব্বু-এইখানে…

রঙিন পাখনা
বিস্রস্ত এলোমেলো
বাবুর মায়ামাখা
হাতছানি
যেন প্রজাপতি

কিছুক্ষণ পর অজস্র পিঁপড়ের
মিছিল ওই শরীরে
নিশ্চিহ্ন আপাত সুন্দর

নিজস্ব নিস্তেজ দেহ টেনে নিয়ে যাচ্ছে
লক্ষাধিক পিঁপড়ে
অনিশ্চিত অন্ধকার গুহাগহরে

২৬ নভেম্বর ২০১৬

ফিদেল কাস্ত্রো

যদিও অন্ধকার চারদিকে
সময় ছিলো আপনার অধীন অনুগত
কমরেড ক্রমান্বয়ে দিগন্তরেখা সরে যাচ্ছে ইদানিং
মানুষের বলবার কথাগুলো আঁকহীন সাদা সেøট আর
মার্বেল পাথরে খোদাই বর্ণহীন
কখনো কি মনে হয়েছে আপনার:
বৃথাই নষ্ট হলো যৌবনের বসন্ত রঙিন
সমাজতন্ত্রের পরাভব
ধ্বসে যাচ্ছে: মূল্যবোধ-সাম্য-স্বাধীনতা
সোভিয়েত রাশিয়ার পতন
কতোক্ষণ আর লড়াই চলে একাকী
বন্ধুদের ঘরে ফেরা; ততোক্ষণে স্তব্ধ লাল ঝাণ্ডা মিছিল
তবু সুউন্নত গ্রীবা একাগ্র লড়াইয়ের বাসনা
রণক্ষেত্র আগলে রাখার কৌশল
আশাবাদী করে কাউকে কাউকে

কমরেড চলুন এগিয়ে যাই বৈরী পৃথিবীতে

২৯ নভেম্বর ২০১৬

শূন্যতা

শহরজুড়ে নামছে নীরবতা
রক্তক্ষরণ হৃদয়ে
শূন্যতা পরিমাপ হয় না কিছুতেই
মানুষের নাভিশ্বাস, আর্তনাদ, চাপা কান্না
ঢাকা থাকে না; শব্দের আপাত ভাষা নেই
প্রকৃতি গোপন রাখে কখনো কখনো
আন্তর্জাতিক সীমানার দেয়াল
বধির হলেই কি বন্ধ থাকে প্রলয়
অভ্যাস তাড়িত করে যাপন যৌনতা
আর একমুঠো দীর্ঘশ্বাস…

১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

কামিনী ফুলের ঘ্রাণ

শহরকেন্দ্রীক একদল মাতাল
চলছে সভ্যতার খোঁজে
সংকটাপন্ন মানুষের মুক্তি অন্বেষা
আর গণতন্ত্র উদ্ধার প্রিয়-বিষয় তাদের
ঝিনুক নীরবে সহে বেদনার মুক্তো ফলায়

ইদানিং কামিনী ফুলের গাছ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও
ঢাকা শহরের অলিগলি তেপান্তরের মাঠ
সুউচ্চ মিনারের দেয়াল
কোথাও না

একজন কানাই তারস্বরে চেচায় দিনরাত
সব ঝুট হায়- আলবৎ ঝুট হায়

দেশটা এখন হারুন-অর-রশিদের বাগদাদ
চোখে কন্ট্রাক্ট লেন্স চমৎকার মানায়
উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন
মানুষগুলো পায়ের নিচে থেতলে যাচ্ছে শুধু…

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পরিচিত মুখগুলো হারিয়ে যাচ্ছে শুধু

ঝাপসা হয়ে আসছে পৃথিবী
ছোট হয়ে আসছে সীমানার দেয়াল
পরিচতি মুখগুলো হারিয়ে যাচ্ছে শুধু
ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে…

২৬ মার্চ ২০১৭

ক-রো-না: শূন্য থেকে শুরু

বদলে যাবে পৃথিবী কতোটা
তাণ্ডব শেষে
প্রকৃতি প্রতিশোধ
না আশীর্বাদ
জানাবে কে কাকে
চিলতে জানালায়
বন্দী ডাহুক
ক্ষণ গণনা শুধু
অবিমৃষ্য সময়
ঘটছে দ্রæত রূপান্তর
ভেতরে বাইরে
ক-রো-না স্বপ্নে
অস্থি মজ্জায়
চলছে
চলুক…

০১ এপ্রিল ২০২০

আসন্ন পরিবর্তন

পরিবর্তন আসন্ন পৃথিবীর…

ন্যাংটো করে দিলো ভেতরটা
সযতœ চাকচিক্য আর মরিচীকা
জৌলুস আর উন্নয়ন
বিরামহীন প্রোপাগান্ডা

অসুখ নিরাময়
না-কি পরিশুদ্ধি আত্মার

শূন্যেই নেমে এলো সভ্যতা
সূচনা যেখান থেকে
অহর্নিশ উড়ছে লাল পতাকা

আসন্ন পরিবর্তন মানুষেরও
অংশ বৈ কিছু নয়
ভুলেই ছিলো অন্ধ আদিম একচক্ষু দৈত্য
আর সরিয়ে ফেললো নিজেকে
প্রকৃতি থেকে

চক্ষুর ভেতর থেকে জন্ম নিচ্ছে অন্য কেউ…

০৩ এপ্রিল ২০২০

ভঙ্গুর সময়

উদলা করে দিলো সবকিছু
মেকিত্ব, মেকাপের আড়াল
তৃতীয় চোখ দেখছে সারি সারি লাশ
বয়ে নিচ্ছে কারা যেনো
সভ্যতার কান্না শুনতে কি পাও?
হায় রুদ্ধতা
শেকলের ভেতর দেখছি আরেক শেকল
অন্ধত্ব, ব্যাধির চাইতেও ঘোর তমসা
এ অরণ্য ঢাকা ছিলো এদ্দিন

সহস্র প্রদীপ জ্বেলেছে কেউ গূঢ় অন্ধকারে…

০৪ এপ্রিল ২০২০

বোতলবন্দী বাঘ অথবা আত্ম-প্রতিকৃতি

সম্ভবত নিজেকে ভালবাসে সে সবচে বেশি
ফিরে যায় বারবার আত্ম-প্রতিকৃতিতে
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আঁকে নিজেকে; নিজস্ব মুখায়ব
আয়নায় দেখে আর ভাবে… ভাবে… ভাবে…

মানুষ ভালবেসে নিজেকেই সবচে বেশি
তারপর বন্দী হলে বোতলে
বাঘ বাঘ খেইল…

১০ এপ্রিল ২০২০

আদমসুরত

সুশোভন একটি চপ্পল
জানান দিচ্ছে নিজেকে
ঘুরে ঘুরে
কী কাজে লাগে চপ্পল?
নকশাদার সুন্দর
অনেকটা মানবীয়
নৈতিকও বটে!
সময়ের মানদন্ডে গুণছেন কেউ কেউ

অতীতের এক স্ফিনিক্স পাখি ভাসছে দু’চোখে
আশাহত ঐতিহ্যের বেদনাদায়ক পরিসমাপ্তি
চপ্পল ঘুরে মগজের কোষে
আর প্রলম্বিত হয়
তৃতীয় গণতন্ত্র
সুপ্তি জাগরণ

১৪ এপ্রিল ২০২০

অনিশ্চয়তা

থেমে থাকে না কিছুই যায় থমকে হয়তো
অতঃপর সুনসান নীরবতা
অপূর্ব নীরবতা
প্রতি যাপন শেষে
নিঃশ্বাসের পর
পরবর্তী ধাপ
জানে না কেউ
অদ্ভ‚ত অনিশ্চয়তায়
এক দীর্ঘ জীবন
বোধহীন
খেয়ালের অগোচরে…

১৬ এপ্রিল ২০২০

দেয়াল

এখন নিজের হাত বিশ্বস্ত নয়
অদৃশ্য দেয়াল গড়ে দিয়েছে কেউ
সে-কি ইশ্বর পরম মমতার প্রকৃতি
না-কি সৃজন মানুষেরই
রক্তে অমানবিকতা

বিশ্বাস হন্তার অপর নাম মানুষ
দূরে সরিয়ে দিচ্ছে নিজেকে
একি অপূর্ব প্রতিশোধ

ফিরে আসুক মানুষ
তার বিশ্বস্ত হাতের কাছে
পুনর্বার

ফেরার মানুষ অচেনা তার নিজের কাছেই…

১৯ এপ্রিল ২০২০

অন্তর্ধান

স্বপ্ন থেকে আসে যে হন্তারক
অহর্নিশ তাকে আমি
আটকাই মায়াজালে
আছি এখন লকডাউনে
হিজিবিজি হিজিবিজি
মস্তিষ্কের কোষে কোষে
সুদূর বার্তা বয়ে যায়
রটে যায় গৃহবন্দিত্বের
অসময়ে
কার্পণ্য নেই তবু
অন্তর্জাল বয়ে যে স্রোত
বহমান
আপন মুখচ্ছবি
অন্যের আয়নায়
কদাকার
এতটা খারাপ কোন দুঃস্বপ্নও
বুঝি উত্থিত শিশ্মের হঠাৎ
অবদমন পারে না ঠেকাতে
ভালো সেই গুহার রূপক
শূন্যতায় সমর্পন নিজেকে
হয়ে যাওয়া অদৃশ্য
চারপাশ থেকে

চেতনা অন্তর্ধান হও…
লুপ্ত হও…

২৭ এপ্রিল ২০২০

শুধু কথা বলা বারন

তবু চুপ করে আছি; চুপ করা মানায়
মিছে মিছে ছিনিমিনি খেলা সাপলুডু
শূন্য থেকে শুরু; গুরু দেখছি না কিছু
চোখের উপর জমেছে পরত
বাইরে পারদে ওঠানামা
পঞ্চাশের এই বাংলাদেশে
এমন স্বপ্ন ক’জন দেখে
থাকলে জীবিত বলতে কী এই কথা তুমিও
‘চেয়েছিলাম আমরা এই বাংলা?’
সারারাত
চলছে বৃষ্টি
কষছি আঁক মাটিতে
হঠাৎই দেখি একদল ঘোড়সওয়ার
ধেয়ে আসে
থামো থামো
মুছো না কালের রেখা
অনেক কথা অনেক ছবি
যায় না ধরা সেলুলয়েডে
শুধু অস্পষ্ট আঁচর জমে থাকে
কতগুলো বানরের মৃতদেহ
ফিরে আসে
চুপ থাকো চুপ থাকো
বড্ড অসহায় হয়ে গেছে
এই অস্থির সময়

০৮ মে ২০২০

পতনোন্মুখ পাখি

পরিবর্তনে দৃশ্যের পর দৃশ্য
যে সঙ কেবলি নেচে যায়
কখনো ছায়া কখনো উপযাজক
মূলের সে কেউ নয় আসলে
ক্রমাগত শূন্যতার মাঝে
আরো শূন্য হয়ে যাওয়া
সেধোতে থাকা গভীরে
আরো গভীরে…

ঘটকের যুক্তি-তর্কো-গপ্পো
মস্তিষ্কে তোলপাড় করতে করতে
অবশেষে নেমে এলে খাদে
ফিরে আসে ঘূর্ণিবাত্তায়
লেফটরাইট লেফটরাইট…

চৌকষ আঙুলের ডগায় যে মার্বেল
চিনে নিতে পারে তার লক্ষ্যবিন্দু
সে নিশ্চয়ই পারঙ্গম

শুনছি দূরে কেউ গাইছে… সব ঝুট হ্যায়
আলবাত ঝুট হ্যায়
চেতনায় ফিরে আসে ঋত্বিক
পঁচে গেছি, পঁচে গেছে
বাঙালি বুদ্ধিজীবী… আলবাত…

২৮ মে ২০২০

ধ্বস্ত ল্যাম্পপোস্ট

বাড়তে থাকে আঁধার সেই সাথে রাতও
পাল্লা দিয়ে বাড়ে সময়, একঝাঁক বুনো অস্বস্তি
ক্রমশ গ্রাস করে, করে দেয় নিস্তেজ স্নায়ুগুলো
এই বুঝি আরেক আপনজন
চেনা জানা ভ‚গোলে ইতি টানলেন জীবনের
জানালা থেকে দূরের ল্যাম্পপোস্ট বড্ড বিধ্বস্ত
প্রকৃতিও ক্রন্দনরত আড়াল দিয়ে রেখেছে কাকে যেন
আর কত মৃত্যু… আর কত যন্ত্রণা…

কতোটা পাল্টাবে পৃথিবী নাকি মানুষ নিজেই
অপার শূন্যতা মনে মনে নামতা শেখায়

০৬ জুন ২০২০

অদ্ভুত এই বর্ষাকাল

আকাশে উড়ছিল ঘুড়িটা- নীল রংয়ের
শরীর জুড়ে নীল রঙ
উড়ছিল আর নাচছিল
অদৃশ্যে কেউ ছাড়ছিল সুতো
ছাড়ছিলো… ছাড়ছিলো…

হাওয়া হয়ে গেলো একসময়
নীল এবং সেই ঘুড়িটা

১৬ জুন ২০২০

কীনব্রিজে বিকেলের রোদ

চলমান রিকসা পেডেলে রোদগুলো ধাক্কা খেতে খেতে
আত্মহত্যা করছিলো সুরমার জলে
ঢেউয়ে স্থবির নামতা গুণছিলো কে যেন

ছুটে যাচ্ছিলো শেষ বিকেলের ট্রেন কীনব্রিজ থেকে

মাত্র কয়েক মিনিট
আজো দেখতে পাই
কীনব্রিজের উপর থেকে
বিকেলের শেষ ট্রেন
অপেক্ষমান এক প্রেমিকার আর্ত-চিৎকার
উপেক্ষা করে
ছুটে চলছে
অবিরাম
অজানা গন্তব্যে…

১৭ জুন ২০২০

বিষণ্ন এই শহরে বৃষ্টি নামে

মুছে যাচ্ছে সবকিছু স্মৃতির এই শহরে
আরেকটু বড় হোক প্রিয়তম স্বপ্ন
ধরে রাখতে পছন্দ করি না
তবু বিষণœ স্মৃতিরা খেলা করে
কালরাত্তিরে আকাশ থেকে
অবিরাম কান্না চুইয়ে চুইয়ে
গলে পড়েছে
নীরব স্বাক্ষী দুয়েকটি কাক
একটি ঘাতক ল্যাম্পপোস্ট

ছুটি বললেই কী ছুটি মেলে
অবসন্ন দু’হাত মেলে
বললে গুডবাই

ঘাতক রক্তাক্ত হাত
এখনো ধরে আছে খঞ্জর
প্রতীক্ষা সময়ের

কত স্বপ্ন প্রতিদিন বিসর্জন হচ্ছে পাড়ার ডাস্টবিনে
বিষণœ শহরে বৃষ্টি নামে…
অবিরাম…
মুছে যাচ্ছে… মুছে যাচ্ছে…
সবকিছু…
আমি… অস্তিত্ব আমার…
রক্ত… ঘাম… বীর্য…

০৮ আগস্ট ২০২০

চারদিকে তুমুল কোলাহল

ভেঙে পড়বে একদিন সবকিছু বিষণœ জতুগৃহ
সময়ের উল্লাস, স্তব্ধতা কখনো কখনো সীমাহীন সম্ভাবনা
নিকট-দূর থেকে ভেসে আসা শব্দ
মগজে সেঁটে থাকা আবর্জনা
স্পর্ধা সেতো মানুষেরই একচেটিয়া অধিকার
জানি সবকিছু একদিন ভেঙে পড়বে
মরচুয়ারি হারিয়েছে সৌন্দর্য্য কবেই
এখন আতঙ্ক, ভয় সারারাত

কেউ কেউ দাঁড়ায় পরাজিত সময়ের
মায়াবি আলিঙ্গনে…

০৫ ডিসেম্বর ২০২০

নৈঃশব্দ কান্না হাহাকার

বোবা কান্নায়ও নৈঃশব্দতা জড়িয়ে থাকে
আজ ভয়ানক অসুখ বেধেছে মনে
কখন কে অদৃশ্য হয়ে যায় চিরতরে
চাইলেও যাবে না পাওয়া পদচ্ছাপ
ফিসফাস বাতাসে মৃত্যুকান্নাও চমৎকার হয় তাললয়ে
দেখেছি আমি হেলতে দুলতে একদল
পুণ্যার্থি বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন
আর কি অপরূপ বিদায়- বিদায়-সম্ভাষণ

কান্নাও চমৎকার হয়- মদিরতা আনে
কখনো কখনো
নৈঃশব্দ এক মহান বার্তা
শুনেছি আমি…

০২ এপ্রিল ২০২১

বিহল আদি ব্রহ্মপুত্র

ক্ষত শুকিয়ে গেলেও ক্ষতচিহ্ন রয়েই যায়

দেখেছি ঝড়ের পর বিধ্বস্ত বাগান
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো পালক
অদৃশ্য হলেই কী হারায় মানুষ
না-কি বালুকণায় মিশে
হয় অন্যকিছু

স্তব্ধ আকাশ থেকে স্বর্ণরেণু
ফোটা ফোটা ঝরছে
আর দাবার গুটি
ক্রমশ সরে যাচ্ছে বোর্ড থেকে…

১৫ এপ্রিল ২০২১

এ নগরে স্বপ্নগুলো লুট হয়ে গেছে

যখন মানুষ ভেঙে গুড়িয়ে ছোট হতে থাকে
অপরাজিতা ফুটতে থাকে তখন
কী অদ্ভুত বিষণœ থোকা থোকা

ক্লান্তিহীন স্বপ্নগুলো বণিক ফেরিওয়ালা
পুরে ফেলেছে কবেই মুঠোতে

নয়নতারা খুঁজছি আমি চারদিকে…

১০ মে ২০২১

ড্যাস

ক্লিপে সাটানো ছিলো মুখগুলো
অনন্য রঙিন
একজন কার্টুন হিরো
পরপর টুকে নিলো
তুলে নিলো
ঢেকে দিলো
রেখে দিলো
জামার আস্তিনে

মুখোশগুলো
খোঁজেই চলেছে
তৃতীয় কেউ

১০ মে ২০২১

মহুয়া ও ধানমন্ডি বত্রিশ

স্মৃতিগন্ধা মানুষ স্মৃতিতে সুখ খোঁজে

ফেরারি হয়ে যায় স্মৃতিও – কখনো
চশমা, চুরুটের পাইপ সরিয়ে
জেগে থাকে তখনো আদিম উল্লাস- ছোপছোপ রক্ত
ফেরাও সুখের হয়- রাতভর অপেক্ষা-
ভাবি- যদি সেদিন না ফিরতেন
হয়তো ইতিহাস হতো অন্যভাবে
অস্পষ্ট দেয়ালে কতো কথাই লেখা থাকে…

০৫ ডিসেম্বর ২০২০

প্রত্যাবর্তন

থাকে অনেক কিছু দেখার বাইরেও
দৃশ্যের পর দৃশ্য সেলুলয়েড ফিতায়
নাই-বা থাকলো তোলা…

যাপনের বাইরে কতটুকু
তবু কেউ কেউ মণিকোঠায় রাখে স্মৃতিময়
সেইসব আনন্দ-বিষাদ আর দোলাচল
অস্থিরতা- পরিবর্তন-আকাক্সক্ষী মানুষের হয় না মৃত্যু
বাহান্ন-ঊনসত্তর উত্তাল দিন
একটি বজ্রকণ্ঠ…

হায় স্বাধীনতা
চোখে আমার এখনো তাজা
রক্ত-খুন সিঁড়িতে
ধানমন্ডির সেই বাড়ি নির্জন
একটি মহুয়া গাছ-

কী বিস্ময় দেখো পিতা- ইতিহাস বদলায়
বারবার বদলায়- প্রত্যাবর্তন তোমার
শরীরের চেয়েও স্মৃতিতে

১৪ আগস্ট ২০২১

কফিনে শুয়ে থাকা মানুষ

খোলসটুকু আছে বাকি সব বিষাদ
একজন মরে যায় শুধু শুধু প্রতিদিন
বাহ্যিকতা ছেকে দিলে কী থাকে বলো
টেনে যাওয়া এমনি- টেনে নিতে হয় বৈকি

হত্যা করছে প্রতিদিন এই রাষ্ট্রযন্ত্র
হত্যা করছে…
নিঙড়ে নিচ্ছে ভেতর থেকে
মানুষটাকেই

০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

শেয়ার করুন: