004743
Total Users : 4743
Charbak magazine logo
sorolrekha logo

লেখক তালিকা

জন্ম. ২৩ নভেম্বর ১৯৭৫, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানে। সম্পাদনা করছেন ‘চারবাক’ ও ‘সরলরেখা’। যুক্ত আছেন সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা ‘শুক্কুরবারের আড্ডা’র সাথে। লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহ ও প্রদর্শন কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: মায়াহরিণ, কাব্যগ্রন্থ ২০০৮, চারবাক, বুদ্ধিজীবীর দায়ভার, সম্পাদনা ২০০৯, সংবেদ, পক্ষ—প্রতিপক্ষ অথবা শত্রু—মিত্র, প্রবন্ধ ২০১০, চারবাক, নির্বাচিত চারবাক, সম্পাদনা ২০১১, চারবাক, নাচঘর, কবিতা, ২০১২, চারবাক, ভাষা সাম্প্রদায়িকতা অথবা সাম্রাজ্যবাদি খপ্পর, প্রবন্ধ, ২০১৩, চারবাক এবং মুখোশ, কবিতা, ২০১৬, চারবাক, করোনাকালে, কবিতা, ২০২২, চারবাক।
View Posts →
কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
View Posts →
প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ
View Posts →
বাংলাদেশের উত্তরউপনিবেশি ভাবচর্চার পথিকৃৎ ফয়েজ আলম একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। উপনিবেশি শাসন-শোষণ আর তার পরিণাম, রাষ্ট্র ও সমধর্মী মেল কর্তৃক ব্যক্তির উপর শোষণ-নিপীড়ন ও ক্ষমতার নানামুখি প্রকাশ আর এসবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে লিখছেন তিনি। বিশ্বায়নের নামে পশ্চিমের নয়াউপনিবেশি আর্থ-সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আর রাষ্ট্র ও স্বার্থকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর শোষণচক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার লেখা আমাদের উদ্দীপ্ত আর সাহসী করে তোলে। রুহানিয়াত সমৃদ্ধ দার্শনিক ভাবচর্চা আর সাহিত্যিক-রাজনৈতিক তত্ত্বচর্চাকে একসাথে কবিতার দেহে ধারণ করতে সক্ষম ফয়েজ আলমের সহজিয়া কবিতা। তার কবিতায় তিনি মানুষের প্রাত্যহিক মুখের ভাষার প্রতি উন্মুক্ত। যে ভাষাকে আমরা ব্রাত্য বানিয়ে রেখেছি একেই তিনি জায়গা করে দিয়েছেন কবিতায়। তাই প্রচলিত কাব্যভাষা থেকে তার কবিতার ভাষা ভিন্ন। বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি এ ভাষাকেই বলেছেন মান কথ্যবাংলা, আঞ্চলিকতার বাইরে সর্বাঞ্চলীয় বাঙালির প্রতিদিনের মুখের ভাষা। কবিতাগুলো কখনো কখনো বিভিন্ন ধ্বনি ও শব্দে বেশি বা কম জোর দিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে পারে, যেভাবে আমরা হয়তো আড্ডার সময় কথা বলি। এবং তা একই সাথে বক্তব্যের অতিরিক্ত ভাষারও অভিজ্ঞতা। খোদ ‘আওয়াজের সাথে ইশক’ যেন। প্রাণের আকুতি ও চঞ্চলতার সাথে তাই শূন্যতাও হাজির আছে। সেই সাথে জারি আছে ‘শব্দের দিলের ভিতরে আরো শব্দের আশা’। ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে, নেত্রকোনা জেলার আটপাড়ার যোগীরনগুয়া গ্রামে। বাবা মরহুম শেখ আবদুস সামাদ, মা সামসুন্নাহার খানম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) ও এমএ পাশ করার পর প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণার জন্য এমফিল. ডিগ্রী লাভ করেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ: ব্যক্তির মৃত্যু ও খাপ-খাওয়া মানুষ (কবিতা, ১৯৯৯); প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি ( গবেষণা, ২০০৪); এডওয়ার্ড সাইদের অরিয়েন্টালিজম (অনুবাদ, ২০০৫); উত্তর-উপনিবেশি মন (প্রবন্ধ, ২০০৬); কাভারিং ইসলাম (অনুবাদ, ২০০৬), ভাষা, ক্ষমতা ও আমাদের লড়াই প্রসঙ্গে (প্রবন্ধ, ২০০৮); বুদ্ধিজীবী, তার দায় ও বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব (প্রবন্ধ, ২০১২), জলছাপে লেখা (কবিতা, ২০২১), রাইতের আগে একটা গান (কবিতা, ২০২২); ভাষার উপনিবেশ: বাংলা ভাষার রূপান্তরের ইতিহাস (প্রবন্ধ, ২০২২)।
View Posts →
কবি ও গল্পকার। যুক্ত আছেন চারবাক সম্পাদনা পরিবারের সাথে।
View Posts →
কবি। জন্ম মৌলভীবাজার জেলায়।
View Posts →
প্রাবন্ধিক। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে প্রান্তীয় কৃষক-মধুচাষি, বেতবাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন নিয়ে কাজ করছেন।
View Posts →
জন্ম— জুন, ০৬, ১৯৭৭। জন্মস্থান— উত্তর গোবীন্দর খীল, হাঁদু চৌধুরী বাড়ী, পটিয়া, চট্টগ্রাম। (শৈশব কৈশোর ও তারুণ্যের সময়যাপন) বেড়ে ওঠা (পূর্ব্ব বালিয়াদী, মীরশ্বরাই, চট্টগ্রাম) নানার বাড়ীতে। প্রকাশিত কবিতার বই— ফুলেরা পোষাক পরে না (সাল: ২০১৮, প্রকাশক : মনফকিরা, কলিকেতা)। প্রকাশিতব্য বই— অর্দ্ধনারীশ্বরবাদ : প্রকৃতিপুরুষতত্ত্ব (নন্দনতত্ত্ব), বটতলার বয়ান (ভাষাতাত্ত্বিক গদ্য) ও উদ্ভিদপ্রতিভা (কবিতা)। সম্পাদক— চারবাক।
View Posts →

সম্পূর্ণ লেখক তালিকা

প্রশান্ত হালদার’র কবিতা

সাদা একটা পতাকা

স্বপ্ন কি তুমিই দেখেছিলে শুধু! আমি?
একসঙ্গেই যে ছিল আমাদের স্বপ্নের বুনন;
যুগল বুনন-
সাদা রাজহাঁস
সাদা কবুতর
সাদা বক, বেলিফুল আর
সাদা একটা পতাকা-সাদা সাদা স্বপ্ন।

তুমি স্বপ্ন দেখেছিলে-দেখো না এখন।
স্বপ্নভ্রষ্ট তুমি।

আমি দেখেছিলাম যেমন, এখনও
দেখি অবিকল-ভ্রষ্ট হতে
শিখিনি যে। সাধ্য কার
দলিত-মথিত করে আমার সমূহ-স্বপ্নদল!

সাদা রাজহাঁস
সাদা কবুতর
সাদা বক, বেলিফুল আর
সাদা একটা পতাকা…

 

আহ্ বৃষ্টি

ওগো পুরাতন হৃদয় আমার,
ঝাঁপি খুলে বেরোলে বুঝিবা আজ? বিরহকাল
শেষ হয়েছে কি?
তাই কি আকাশজুড়ে বৃষ্টি নেমেছে এমন!

আহ্! কতকাল… কতকাল… বৃষ্টিতে ভিজিনি কতকাল
ছলাৎছল… ছলাৎছল…

গলিপথ মেঠোপথ রাজপথ

আমাদের বাড়ি চেনো তুমি?
বাড়ি-ফেরা মেঠোপথ?-চেনো না তো!
রাজপথ?-তাও নয়?

অথচ ঠিকই চেনো তো খানকিপাড়া।
খানকিপাড়ার হোয়াইট হাউস, রেড হাউস আর তার
ঘুঁটঘুটে ইয়েলো ইয়েলো গলিপথ-

সারাদিন সঙ সেজে এ-পাড়া ও-পাড়া
এরকম-ওরকম কিছু লেকচার ঝাড়াঝাড়ি;
সুন্দর বয়ান; আর সন্ধ্যে হলেই তো সেই গলিপথ-সেই
পুরনো অভ্যেস। রাতভর বোতল বোতল মাল টানা, সেই
ছুঁড়িটার কসমেটিক প্রলেপ দেয়া কুৎসিত ধ্যাবড়া মুখে
মাঝে মাঝে দুই-একটা চুম্বন, হাত দুটো কখনো-সখনো
তার নগ্ন শরীরের এখানে সেখানে;
কত গলাগলি। ঢলাঢলি। পিরিতের গল্প ফাঁদা!

অবশেষে ভোররাতে নপুংসক তুমি-সেই নটিমাগির সাথেই
আকণ্ঠ আপোস করে ফিরে আসো ঘরে।

জুতো চেনো?

সমস্ত জুতোর কারখানা আমাদের
দখলে এখন। হদ্দ রকমের জুতোয়
মালা গেঁথে একদিন টাঙিয়ে
দেব তোমার ফিরতি পথে, মোড়ে মোড়ে।
অশ্বযান থেমে যাবে হঠাৎ! আচমকা চমকে উঠবে তুমি-
মুখে টুঁ-শব্দটি নেই।
কান্নার সাহসটুকু নেই।
নেশা কেটে গেছে।

ঠিক চিনবে তখন-
আর এক পা বাড়ালে সামনের এটাই যে রাজপথ!
কালো কালো রাজপথ।
দখল নিয়েছে সব মেঠোপথের মানুষ যতো…
মরণের সুন্দরতম মুহূর্ত
পূর্ণিমা নিশির লাস্যময়ি অখণ্ড আকাশ…
চন্দ্র সেখানে সেজেছে বউ, ঘোমটা দিয়েছে খুলে,
অঞ্জলিভরে ঢেলেছে সোনার জোছনা, আর
ঝলমল ঐ তারারা যেন সখিপরিবৃতা ঐ চন্দ্রবধূর;

জোছনায় নিমজ্জিত জমিনজুড়ে দিকহীনবিস্তৃত শস্যময় মাঠ…
আউলা বাতাসে ঢেউ খেলে যাওয়া
সোনালি সোনালি মাঠ; আহা… রে আহা
পোড়া এ দু’চোখে ধাঁধাঁ লাগে, মগজে মননে
কি দারুণ তোলপাড়, কি যে সুখ সুখ শিহরণ
বিমোহিত আমি দিগন্তব্যাপি দু’ডানা মেলে ভেসে চলেছি
কোন্ মোহনায়… কোন্ অজানায়…?

পাকা ফসলের মৃদু মৃদু ঝনঝন…
যেন বা নিশিগহীনে নূপুর বাজে অভিসারিকার,
পক্ষিরাসব নির্ঘুম নিশাচর, গোখরোসাপ ক্ষেতের আলে স্বভাব ভুলে নৃত্যরত,
সোয়ামির সোহাগে নিশুতি নিরালা ভেঙে খলখল হাসি কিষাণি বধূর,
হতচ্ছাড়া কোন বালক বাঁশের বাঁশিতে ছড়িয়েছে একটানা মাতাল মূর্চ্ছনা,
মেঠো বকুলের দুনো সৌরভ বিছিয়েছে মায়াজাল…
সুন্দর-কি যে সুন্দর! এ যে স্বর্গের বিপরিতে স্বর্গ এক।

…দারুণ নৈঃশব্দভেদি নৈঃশব্দময় ঘোরলাগা এমন বিস্ময় চিত্রপট
কখন কে করেছে রচনা? কবে দেখেছে কে? কোন সে ঈশ্বর?
গিতিময় সুগন্ধিময় সোনারং গেঁওকাব্য এ ধরণি আজ,
অলংকারে অলংকারে সেজেছে সে হেসেছে বসন খসিয়ে…

আহা!
মরণের এই মধুক্ষণ কেন অকারণ… বৃথা যাক কে-বা চায়।

নন্দিতা তোমাকে

এসএমএস পেয়েছি নন্দিতা। ঠিক তখন-
যখন মিছিল শেষ করে মধুর ক্যান্টিনে বসে
শার্ট খুলে ঘাম শুকোচ্ছি বাতাসে-ঠিক তখনই। এখনই।
কাঁচা হলুদের সুগন্ধি না শুকোতেই
তাজা ফুলের পাপড়িগুলো
বাসি না হতেই আজ হঠাৎ স্মরণ-
মনে হয়েছিল কিছু সান্ত¡নার কথা
লিখেছ হয়তো। কিন্তু দেখি সে ভাবনা ভুল সম্পূর্ণই-
এসএমএস-এর সমস্তটা জুড়ে এত্ত এত্ত অভিযোগ! ঠাসা ঠাসা!
লিখেছ এমন-ঘরময় নিল আলো,
খুব আবছা আবছা, কিছু দেখা যায় কি না যায়;
ডিভিডিপ্লেয়ারে সানাইবিলাপ ক্ষিণস্বরে-কিছু
শোনা যায় কি না যায়; কেমন শুভ্রতা
আর মৌ মৌ গন্ধ ঘরময়।
খুব কাছাকাছি জেগে আছো দু’জন, সিমানাহীন;
আদরে আবক্ষ আলিঙ্গনে টেনে তোমার মসৃণ সারা গালে
আলতো আলতো মুখ ঘষছে সে;
পিষ্ট হচ্ছে তোমার পিঠের নিচে কিছু তাজা ফুল;
পরম আবেশে যেন নেশা নেশা দু’চোখ তোমার বুঁজে আছো;
কালবৈশাখি তুমুল এই উঠবে এখন-সেই শুভক্ষণে, আহা সেই শুভক্ষণে
বেসুরো বিকট শব্দে হঠাৎ বক্ষবিচ্যুতি
তোমাদের!
ঝট করে উঠে
চট করে দরজায় এসে দাঁড়ালে-তখনও
মিছিলের রেলগাড়ি ছুটছে-ছুটছে-ঝমঝম, লাইটপোস্টের
উজ্জ্বল আলোয় তবে নিশ্চিত সনাক্ত করা গেল
ছুটন্ত রেলগাড়ির পুরোভাগে আমি; সেই আমি-
একদিন মিছিলেই যাকে আবিষ্কার করেছিলে।
আরও লিখেছ-বড় বেশি নাকি উদ্ধত ভঙ্গিমা
ছিল আমাদের? উদ্ধত না হলে তো মিছিলে
মানায় না; আজ এই গোলক ভ‚খণ্ডে
ঔদ্ধত্যই আমাদের অবয়ব। বক্ষবিচ্যুতির পর
তুমিই কি উদ্ধত ছিলে না নন্দিতা?
লিখেছ-তোমার নাকি সমস্ত গা জ্বলছিল রি রি।
ইচ্ছে হচ্ছিল তোমার-ঠিক তক্ষুনি ডাকিয়ে নিয়ে
তোমার সে লোকটিকে দিয়ে আচ্ছামতো
শাসিয়ে দেবার; কিম্বা টেলিফোন করে
নগরপুলিশে। আমিই তোমার সবচেয়ে গাঢ়
হলুদ মুহূর্ত নাকি করেছি বিবর্ণ,
করেছি চৌচির; নাকি আমার জন্যেই লণ্ডভণ্ড সব।
ক্রুদ্ধ। ক্ষুব্ধ। স্তব্ধ তুমি।
তুমি দরজায় তখনো দাঁড়িয়ে…
আমার নন্দিতা,
এসএমএস পড়ে এখন কি মনে হচ্ছে জানো?
যদি সত্যি সত্যি আমাকে ডাকতে, আমি
সত্যি যেতাম তোমার কাছে। দরজায়
একদম মুখোমুখি সামনাসামনি দাঁড়িয়ে
পূর্ণিমার মতো করে সুন্দর সাজানো ওই তোমার চন্দনমাখা অপরূপ মুখে
একগাল থুথু ছিটিয়ে দিতাম।

বিষমন্তর

তুমি কানে ঢাললে বিষমন্তর, তুমি বললে যে
ভালোবাসি। অমনি আমার পাল্টে গেল সবকিছু-
উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম; সবই।
সব হারিয়ে তোমার সামনেই একলা দাঁড়িয়ে।
বেশতো ছিলাম বাউণ্ডুলে দিগি¦দিকহীন একলা মানুষ,
সব মানুষের সাথেই ছিলাম।
কিসের উজান কিবা ভাটি, বাতাসের বিপরিতে
বাতাস-স্রোতের বিপরিতে স্রোত আমি।
সেই সে আমাকে কেন বেঁধে ফেললে? এখন আমি
পিছোতে পারিনে, এগোতেও যে পারিনে।
নিলকণ্ঠ বিষে ক্রমশ নিলকমল…
কেন যে বললে ঘর বাঁধি! তাবৎ সে ভূমণ্ডলাকে
আর ঘর ভাবতে পারিনে। ছোট্ট একটা উঠোন
দু-একটা ছোট ছোট কবুতরের খুপরি ছাড়া
আমার দু’চোখ আর কিচ্ছু দেখে না যে।
অন্তরাত্মা বুঝি অন্ধ হয়ে গেল!
আমরা দু’জন ছাড়া দু’জনার
কিইবা থাকল আর?
কেন বললে অমন করে, অমন ব্যাকুল হয়ে?
কেন কানে ঢাললে বিষমন্তর?
ভালোবাসি!
ঘর বাঁধি!

লাল মুদ্রায় সাদা পুঁতি

মেলার আঙিনা বড্ড বেশি মুখরিত গুঞ্জরিত
চতুঃসিমানা আলোয় থৈ থৈ।

তোমার পুঁতির মালা ফেলে রেখে
কোথায় হারিয়ে গেলে? সাদা একটা পুঁতির মালা
ওই কণ্ঠে পরাবো বলেই এক হাজার একশো
বছর আমার ঘুম ছিল না তো!
মুঠোভরা লাল মুদ্রায় তোমাকে আজ
কিনে দিলাম তা-কেন তা ফিরিয়ে দিলে! আমার
এক হাজার একশো বছর…

মেলা ভাঙবার এখনও অনেক-অনেক-দেরি।

কত বৃন্দ যে আসলো গেল,
কত যুগল এসেছে
কত যুগল ফিরেছে
আর আমি? পকেটে দু’হাত ভরে পুঁতির দোকানে
একলা দাঁড়ানো-যেন কলাগাছ। তুমি ফিরে আসলে না।
কোথায় খুঁজব বলো? মেলায় হারালে
কেউ-খুঁজে কি পাওয়া যায়?
কোন সে আড়ালে তুমি? কোথায় হারালে তুমি! কোথায় লুকালে?
মেলা ভাঙবার এখনও অনেক-অনেক-দেরি, অথচ আমার
হারানো তো শেষ।

আমি ফিরে যাচ্ছি।

বৃন্দ নয় যুগলও নয়
ফিরে যাচ্ছি একা-

সাদা এ পুঁতির মালা তুমি কেন
নিলে না যে! লাল মুদ্রায় কিনেছি বলে?
ছন্দপতন
আজকাল তুমি তো মানুষ নয়-
কুত্তা কিম্বা বিড়ালকেই ভালোবাসছ
বেশি। অবসরে এখন কখনো কোনো ফুলগাছ
কোনো কবিতার বই ছুঁয়েও না দেখো।
লোমশ চতুষ্পদের পেছনে
পুরোটা ভাবনা, পুরোটাই অবসর।

তোমার মুখের দিকে তাকাতে পারিনে।
কসমেটিকের প্রলেপে-প্রলেপে-প্রলেপে-
একটু একটু করে হারিয়ে ফেলেছ
প্রায় সবটুকু লাবণ্য মুখের।
তোমার অমন মুখ! এখন কেমন যেন ভয়াল কুৎসিত
আর কেমন শুয়োরমুখো হয়ে যাচ্ছ ক্রমশ।

দু’দিন বাদেই এইসব কুকুর-বিড়াল ফেলে
শুয়োরকেই ভালোবাসবে বেশি; হয়তো-বা-
হয়তো-বা-

মনে পড়ে সেই প্রথম বাসাবদল? শোকেসটা
সামান্য ভেঙেছে বলে কিরকম কেঁদেছিলে? কেমন ফোঁপানি
রেলিঙের খুঁটি ধরে! সারাটা রাত্তির!

অথচ এখন-
হৃৎপিণ্ডের খাঁচাটা যখন ভেঙে ভেঙে
খান খান, পান্তা খাওয়া মাটির শানকিটা ভেঙে ভেঙে
খান খান, বিশাল এ আমাদের আঙিনা যখন ভেঙে ভেঙে
খান খান টুকরো টুকরো-
তখন কাঁদতে ভুলে গেছ তুমি,
চোখে একটা ফোঁটাও জল নেই!
তোমার অমন চোখ!

তোমার ছন্দপতন দেখে, তোমাকে এখনো

অদ্ভুত সহজ স্বাভাবিক দেখে আমার দু’চোখে
সারাক্ষণ কি ভিষণ কষ্ট-কষ্ট-আর কষ্ট…
প্রেম
মজিলে দু’জনে কি যে হয় দু’জনার
কেমনতর যে হয়ে ওঠে মন-পবন।
একের ভেতরে অন্যজনা অন্যের ভেতরে একজন
রঙিন সুতোয় গেঁথে যায় এফোঁড় ওফোঁড়;
টুপ করে দেয় ডুব উড়াল পঙ্খি
অচিন পাতালে। কাদা-বালু ছুঁয়ে
ফিরে আসে ফের
ভেসে ওঠে
হেসে ওঠে
নিরঞ্জনে সন্তরণ…

কেমন পরিবর্তিত হয়ে যায় অবয়ব, যেন
অচেনা অচেনা অন্য কেউ আমি।
বুকের মধ্যিখানেতে নামে টাপুর-টুপুর বৃষ্টি,
যুগল নৃত্যের তাল ওঠে ঠুমরি-কাহারবায়,
নাচের মুদ্রায় নিল সাপ ফণা
তোলে-চড়ে বসি ফণার ওপর,
পাঁজরের দুর্গম গহীনে শুনি
ঘোড়ার খুরের আওয়াজ।

পই পই ঘোরে নাগরদোলা;
যুগলে যুগল চড়ে বসে চলে নিঃসঙ্গ বিহার।
দুইজনের কি যেন হারায় কি যেন হয় অদল-বদল,
তা কি থাকে আর-যা ছিলাম? যেন
অন্য সে মানুষ
অন্য সে দু’জন।

প্রেম,

তুই এমন সে এক বেহুলা ভাসান-
চারপাশে ছিল যা তা ঠিক থাকে সব
কেবল বদলে যায় মানুষ দু’জন।

শেয়ার করুন: