স্বপ্ন ভাঙা পদাবলি
কর্কশ পেরেক বুকে ঠুকে যন্ত্রণায় কাতর হৃদয়
অগ্নিদগ্ধ পোড়া ঘ্রাণ জীবনের রঙ বদলায়।
হৃদয়ের কাছাকাছি নেমে পড়ে বাইরে ফাগুন
জলের সংসার থেকে নিভে যায় বাতাসে আগুন।
মায়াবী করুণা ক্রমাগত বেড়ে ওঠে মিথ্যের মহলে
অনাদর অভিমানে বরফ নদীতে আলো জ্বলে।
নদী ভাঙে নদী থেকে মেঘ ভাঙে দূর নীলিমায়
স্বপ্ন ভাঙে চোখ থেকে অন্য চোখে নষ্ট জোছনায়।
এক প্রেতাত্মার শারীরিক গল্প
নিবিড় জ্বরের মতো এখানে জড়িয়ে আছো তুমি
প্রেমের পিপাসা মেড়ে একাকিত্ব নিয়তির গায়ে।
মুখের ভেতর দিয়ে অহর্নিশ আগুন বেরুচ্ছে
চোখের ভেতর গাঢ় অন্ধকার রাত্রির শ্মশান।
তোমার শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে- প্রেতাত্মা শরীরে…
সেই হিমযুগ পর একদিন তুমি আচানক
ধরলে এ নীল লাভা, মায়াবী আগুন ঝড় হয়ে।
ক্রমশ বুলিয়ে দিলো সেই প্রেতাত্মা শরীর…
তখন পাথর ঠোঁট সত্যি চেপে বসলো তোমাকে;
তোমার নিমগ্ন বাহু আড়াল করলো শেষবার
আদিম হাওয়া যেন, অন্ধকার জলে টেনে নিলো।
জ্ঞান চক্ষু খুলে যায়
জ্ঞান চক্ষু খুলে যায় একবিংশ শতাব্দীর রক্তাক্ত প্রজন্ম
ঝুলন্ত চাঁদের ভাঁজে ভাঁজে স্বস্তির নোঙর ফেলে,
প্রত্যাবর্তনের গভীর ঘুম কেড়ে নেয়; মুমূর্ষ সময়
যন্ত্রণায় আড়স্ট শরীরে ঘর্ষণের শব্দ হয় গুহার ভেতর।
উন্মুক্ত স্মৃতির প্রতিচ্ছবি ঘোলাটে আঁধারে প্রতিম্বিত হয়;
সতত পতঙ্গময়ী অভিশাপগুলো আশীর্বাদ হয়ে ওঠে
অজস্র নিবিড় আশীর্বাদগুলো অভিশাপের প্রলেপ পড়ে।
মৃত্যুমুখী দাপাদাপি করে মৃত্যুর শরীর
ছলচাতুরী পাথর ভাঙে, কষ্টি সে পাথর;
ওদিকে ঈশ্বর ওত পেতে বসে আছে মৃত্যুর উল্লাসে।
আমার সমাধি
সমাধি-মৃত্যু-শান্তি; মৃত্যু-সমাধি-শান্তি।
কেঁদোনাকো তুমি, হাতে-হাত ছুঁয়ে দেখ-
এখানে এভাবে এই যে আমি…
জ্যোৎস্নার জলে ঘাসের ঘ্রাণে
শুয়ে আছি আমি, আমার সমাধিতে।
করুন কপালে চাঁদের চুম্বনে
এঁকে দেয় সমাধির শরীর…
সূর্যের তাপে, বায়ুর বিশ্বাসে
বালুর বালিশে শুয়ে আছি আমি-
আমার সমাধিতে।
একদিন মরুভ‚মির কান্নায় বালু ভিজে
নুয়ে পড়ে; তথাপি জোনাকিরা আলো
জ্বেলে দেয়- আমার সমাধি পরে।