005468
Total Users : 5468
Charbak magazine logo
sorolrekha logo

লেখক তালিকা

জন্ম. ২৩ নভেম্বর ১৯৭৫, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানে। সম্পাদনা করছেন ‘চারবাক’ ও ‘সরলরেখা’। যুক্ত আছেন সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা ‘শুক্কুরবারের আড্ডা’র সাথে। লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহ ও প্রদর্শন কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: মায়াহরিণ, কাব্যগ্রন্থ ২০০৮, চারবাক, বুদ্ধিজীবীর দায়ভার, সম্পাদনা ২০০৯, সংবেদ, পক্ষ—প্রতিপক্ষ অথবা শত্রু—মিত্র, প্রবন্ধ ২০১০, চারবাক, নির্বাচিত চারবাক, সম্পাদনা ২০১১, চারবাক, নাচঘর, কবিতা, ২০১২, চারবাক, ভাষা সাম্প্রদায়িকতা অথবা সাম্রাজ্যবাদি খপ্পর, প্রবন্ধ, ২০১৩, চারবাক এবং মুখোশ, কবিতা, ২০১৬, চারবাক, করোনাকালে, কবিতা, ২০২২, চারবাক।
View Posts →
কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
View Posts →
প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ
View Posts →
বাংলাদেশের উত্তরউপনিবেশি ভাবচর্চার পথিকৃৎ ফয়েজ আলম একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। উপনিবেশি শাসন-শোষণ আর তার পরিণাম, রাষ্ট্র ও সমধর্মী মেল কর্তৃক ব্যক্তির উপর শোষণ-নিপীড়ন ও ক্ষমতার নানামুখি প্রকাশ আর এসবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে লিখছেন তিনি। বিশ্বায়নের নামে পশ্চিমের নয়াউপনিবেশি আর্থ-সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আর রাষ্ট্র ও স্বার্থকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর শোষণচক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার লেখা আমাদের উদ্দীপ্ত আর সাহসী করে তোলে। রুহানিয়াত সমৃদ্ধ দার্শনিক ভাবচর্চা আর সাহিত্যিক-রাজনৈতিক তত্ত্বচর্চাকে একসাথে কবিতার দেহে ধারণ করতে সক্ষম ফয়েজ আলমের সহজিয়া কবিতা। তার কবিতায় তিনি মানুষের প্রাত্যহিক মুখের ভাষার প্রতি উন্মুক্ত। যে ভাষাকে আমরা ব্রাত্য বানিয়ে রেখেছি একেই তিনি জায়গা করে দিয়েছেন কবিতায়। তাই প্রচলিত কাব্যভাষা থেকে তার কবিতার ভাষা ভিন্ন। বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি এ ভাষাকেই বলেছেন মান কথ্যবাংলা, আঞ্চলিকতার বাইরে সর্বাঞ্চলীয় বাঙালির প্রতিদিনের মুখের ভাষা। কবিতাগুলো কখনো কখনো বিভিন্ন ধ্বনি ও শব্দে বেশি বা কম জোর দিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে পারে, যেভাবে আমরা হয়তো আড্ডার সময় কথা বলি। এবং তা একই সাথে বক্তব্যের অতিরিক্ত ভাষারও অভিজ্ঞতা। খোদ ‘আওয়াজের সাথে ইশক’ যেন। প্রাণের আকুতি ও চঞ্চলতার সাথে তাই শূন্যতাও হাজির আছে। সেই সাথে জারি আছে ‘শব্দের দিলের ভিতরে আরো শব্দের আশা’। ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে, নেত্রকোনা জেলার আটপাড়ার যোগীরনগুয়া গ্রামে। বাবা মরহুম শেখ আবদুস সামাদ, মা সামসুন্নাহার খানম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) ও এমএ পাশ করার পর প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণার জন্য এমফিল. ডিগ্রী লাভ করেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ: ব্যক্তির মৃত্যু ও খাপ-খাওয়া মানুষ (কবিতা, ১৯৯৯); প্রাচীন বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি ( গবেষণা, ২০০৪); এডওয়ার্ড সাইদের অরিয়েন্টালিজম (অনুবাদ, ২০০৫); উত্তর-উপনিবেশি মন (প্রবন্ধ, ২০০৬); কাভারিং ইসলাম (অনুবাদ, ২০০৬), ভাষা, ক্ষমতা ও আমাদের লড়াই প্রসঙ্গে (প্রবন্ধ, ২০০৮); বুদ্ধিজীবী, তার দায় ও বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব (প্রবন্ধ, ২০১২), জলছাপে লেখা (কবিতা, ২০২১), রাইতের আগে একটা গান (কবিতা, ২০২২); ভাষার উপনিবেশ: বাংলা ভাষার রূপান্তরের ইতিহাস (প্রবন্ধ, ২০২২)।
View Posts →
কবি ও গল্পকার। যুক্ত আছেন চারবাক সম্পাদনা পরিবারের সাথে।
View Posts →
কবি। জন্ম মৌলভীবাজার জেলায়।
View Posts →
প্রাবন্ধিক। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে প্রান্তীয় কৃষক-মধুচাষি, বেতবাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন নিয়ে কাজ করছেন।
View Posts →

সম্পূর্ণ লেখক তালিকা

সরলরেখা সিরিজ: শামসুদ্দোহা শোয়েব-এর কবিতা

জোহরা আমার

ভেবেছিলাম তোমাকে বিজুলী চমকে পাবো
আমি তাই দাঁড়ালাম খোলা প্রান্তরে
সম্মুখে অবারিত দিগন্ত, মাথার উপর মেঘমুক্ত আকাশ;
কিন্তু মেঘহীন বৃষ্টিহীন আকাশে কি করে বিজুলী চমকায়!
হ্যাঁ, তবু মেঘ এলো, বৃষ্টি এবং বিজুলীও
কিন্তু তুমি নেই।
কারা যেন বললো, তুমি রঙধনুতে আছো
বৃষ্টিকে বলতেই সে ঝরে গিয়ে পথ করে দিলো
সহাস্য প্রকৃতি: আকাশজুড়ে রঙের খেলা
যেন দীপাবলি উৎসব
তবু তুমিহীন;
শুনলাম, না, তুমি রঙধনুতে নও-নক্ষত্রলোকে বেড়াতে গেছো
দেবী ইশতার তোমার মেজবান;
আমি তখন আর্তেমিসকে পাশ কাটিয়ে
তোমা পানেই ধাবমান হলাম
মনে পড়লো দেবীকেও,
আমি তো একবার গিলগামেশ হয়ে তার প্রেম ফিরিয়ে দিয়েছিলাম
তার স্বর্গবৃষও আমার হাত থেকে নিস্তার পায়নি;
তবু তুমি ইশতার-আলয় থেকে পলাতকা
নেবুশাদনেজার-প্রিয়তমা তোমাকে ডেকেছেন তার শূন্য-উদ্যানে;
আমি তখন ইতানা-ঈগলের মতো পাখা মেললাম
হায় দুর্ভাগ্য, জটায়ু ভাবলেন আমিই হয়তো রাবণ
আর তুমি সীতা; তাই পথরোধ করে আমায় দেরি করিয়ে দিলেন;
সহস্র হাজার নিযুতবর্ষ ধরে এভাবেই আমি দিন কাটাই
একবার বিজুলীতে তো একবার বাবিলে
একবার সরযু নদী তীরে তো আরেকবার স্বর্ণলংকায়
কখনও তোমাকে জলপরী ভেবে ডুবসাঁতার কাটি
অচেনা দরিয়ার প্রাচীন নাবিকদের নিয়ে;
লাইলিতের কাছে শুনি তার দয়িত দেও-দানোদের নাম;
তুমি যদি জোহরা হও
আমি তাহলে হারুত-মারুত হতেও রাজি
শরাবের পেয়ালা হাতে শুধু ডাকো একবার
মদির কটাক্ষে ছুঁড়ো কামনার বাণ;
লীন হই তোমার ইশকে-নির্বোধ জনতা বলুক
এ কোন্ কলিকাল, বেশরম এক আওরতে মশগুল
ফেরেশতা আল্লার।

 

তোমাতেই সমর্পিত সখা হে

সকল সৌন্দর্য্য তুমিই ধারণ করেছো
সকল সৌন্দর্য্যে তুমিই দীপ্তিমান
আমি তোমার স্রষ্টা তবু তোমা-দর্শনে
বিমোহিত-হতমান তোমা প্রেমে;
কদম ফোয়ারা মোড়ে দাঁড়ানো তোমার দীপ্তি
রমনা-মৎস্যভবন ছাড়িয়ে আশুলিয়া-টাঙ্গাইল হয়ে
যমুনার উপর দিয়ে কোথায় যে হাঁকিয়ে যায়;
ওদিকে আমি যখন যাত্রাবাড়ী মোড়ে আটকে থাকি
ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে, সিলেট-সুনামগঞ্জের পথে
তখন তুমিই-তোমার সেই দীপ্তি আমাকে
তিতাসের হাওড় ডাইনে রেখে মাধবপুরের সড়ক
ধরে কীনব্রিজের ওপারে নিয়ে যায়;
তারপর সহাস্য সম্মুখে এসে দাঁড়ায় মেঘপ্রিয়তম
মেঘবতী মেঘালয়; আবারও একটু ডানে ঘুরলেই
আসামের মস্ত নলখাগড়া পাহাড়-উপত্যকা বরাক
আমি তখন চিৎকার করে বলি:
‘স্টপ, স্টপ ড্যাম টিপাই!’
আমারই সৃজন তুমি তবু ভাবি যে তোমারই রহম
আমাকে দিয়েছে সুযোগ তোমা সৃজিবারে
বলেছো যে, তুই মোর মালঞ্চের হবি মালাকর;
দক্ষিণে সমুদ্র অতল-উত্তরে দেবতাদের অধিবাস
কোথায় নেই তুমি! তোমার দীপ্তি কখনও তুরে-সিনাইয়ের
আকাশঝরা নূর কখনও লেবাননের সিডার বনের
বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধতা হয়ে ঝরে আমার শ্রাবণ-অন্তরে;
সখা হে, প্রগলভ হাসি দিয়ে একদিন আমাকে
ডেকে নিও তোমার বুকের নিরবধি সুরভিতে।

 

আনত দিঠি: ভালোবাসি ৩

আবার আসছে ফিরে মাঠ ঘাট প্রান্তর
অনন্ত নক্ষত্রবীথি-গান,
যে পথে হেঁটে যাই, না চিনেই-
সেই পথ;
চরাচরব্যাপী জলের কান্তারে পাখিদের ওড়াওড়ি
বর্ষার জলে ভেসে যাওয়া কদমের ফুল
কদমেরই পাতায় ঝলোমলো বৃষ্টির ছাঁট;
দিগন্ত ধরবো বলে ছুটে যেতে যেতে
থমকে দাঁড়ানো সন্ধ্যার জাঙ্গাল
আবারও এসেছে ফিরে কারও মুখপানে চেয়ে থাকার
নিলাজ সময়
‘একটু এগিয়ে দিই, রিকশায় তুলে’-বলার বেহায়া হাসি;
-আপনাকে শাড়িতেই মানায় ভালো, কাল না হয়
শাড়ি পরেই আসুন, বইমেলায়: একটি বই বেরুবে আমার,
কবিতার-
কি আসবেন তো, কাল!
আনত দিঠি, সবই এসেছে ফিরে, সবাই: এসেছে ফিরে
আবারও ভালোবাসা, মাঘ-রোদে পিছুছোটার হলুদিয়া পাখি,
আবারও এসেছে ফিরে
ঘোরলাগা জুঁইয়ের সকাল-তুমি এসেছো তাই!

 

বেবিলন-১

আমার জাগরণ-নৈঃশব্দ্য ঘিরে ঘিরে কেবল
তোমার গুঞ্জন
তুমি আসবে-আমি যেনো তোমার অকারণ প্রতীক্ষায় থাকি;
বলো, আমার কি এমন বয়ে গেছে? স্বপ্নভারাতুর
আমার প্রতীক্ষায়ই তো কতো অন্যজন
তারা একদিন চষে ফিরেছে দূর সমুদ্রপৃথিবী,
ফিনিশিয়া, টায়ার থেকে ক্রিট, কার্থেজ, ট্রয়
সিন্ধু বাবিল থেকে ওফির;
কতো জল বন্দর তোলপাড় করে ছুটেছে তাদের জাহাজ
দজলার উজান বেয়ে পৌঁছে গেছে সুমেরের ঘাটে
এডেন ছেড়ে মলাক্কা, গুয়াংঝু-কোথায় যায়নি তারা?
-নগর নটিনী হেসেছে তাদের দেখে এরক অক্কাদ কলনি
উর কেলহ নিনেভে; বীণা আর বাঁশিও শুনেছে মুগ্ধ,
কোনও এক যুবক-যুবলের তাঁবুতে শুয়ে;
আজ তারা কায়া নয় তবু ছায়া হয়ে জড়ো হয়
প্লাবন-উৎক্রান্ত এক পলিভূমিস্মৃতিতে: এখানেই
একদিন ছিলো যাবতীয় ছোটাছুটি: কতো কাজ পড়ে আছে
নগর, মন্দির কিছুই হয়নি গড়া
মানবিক ঐক্য-সন্ধানী তাই তারা আগুনে পুড়িয়ে কর্দম বানায়
ইটের স্তূপ, এবার আকাশভেদী উঠে যদি মিলনের বুরুজ
হায়! তখনই নেমে আসে ধাঁধা, কারা যেন
এসে বলে, বিভাজিত হও, ক্ষুদ্রই মহৎ
আমরাই গড়েছি তোমাদের, এখন ছড়াবো
তোমাদের মিলনে আমাদের ভীতি;
আমিও ছিলাম সেদিন ছড়ানো-হাহাকারে
তবু হেঁকে বলেছিলাম, আমরা আবার আসবো!

 

বৃষ্টি, শ্রাবণ ও তুমি

আদুরে মেঘেদের মতো সারাক্ষণ তোমার অভিমান
তিলতিষিক্ষেত ধরে আমি যতোবার
হেঁটে যাই, তোমার কথা মনে পড়ে যে
তোমার সঙ্গে আমার শ্রাবণেই দেখা হতো;
একবার কি মনে করে যেনো আষাঢ়ে এসে
আমার দুয়ারে দাঁড়িয়েছিলে, বৃষ্টিতে
ভিজে সপাসপ-আমি তখন তোমাকে
চিনতে না-পেরে ভেবেছিলাম পথভোলা কোনও
মাধবীলতা-আমার উঠোনে কেয়া হয়ে
ফুটতে চাও; তারপর ফিক করে
হেসে দিয়ে দৌড়ে পালিয়েছিলে
শ্রাবণের দোহাই দিয়ে; আর তোমার
চলে যাওয়ার পর আরও গভীরতর বৃষ্টি নামলো;
আর আমি দরোজার ঝাঁপ না-নামিয়ে
বৃষ্টির ছাঁটে ভিজতে লাগলাম।

শেয়ার করুন: