লিখেছেন- আলতাফ পারভেজ, এম এম আলী, শামসুদ্দোহা শোয়েব*
`In Assam, if you’re wearing a lungi or a beard, people say your’re from Bangladesh’-Time, 05 Feb, 2009
বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সীমান্ত প্রাচীর
প্রায় ৪০৯৬ কিলোমিটার (স্থলে ২৯৭৯, জলে ১১১৬) জুড়ে থাকা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দুটি আলাদা রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ঘোষণা করলেও স্থানীয় জনপদ ততটা আলাদা নয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সীমান্তে হাজার হাজার পরিবার সীমান্তের দু’পারে কৃত্রিমভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে আছে। ‘সীমান্ত’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার আগে অতীতকাল থেকেই বর্তমান সীমান্তের দু’পারে এসব পরিবারের আত্মীয়তার বন্ধন, ছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও। কথিত সীমান্ত অনেক পরিবারের বাড়ির একেবারে উপর দিয়ে গেছে-যে কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বরাবরই একে বিশ্বের সবচেয়ে ‘অমানবিক সীমান্ত’ হিসাবে উলেখ করা হয়।
এসব বিবেচনা সত্তে¡ও ১৯৮৬ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রকল্প নেয়। দিলিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বারংবার রাজনৈতিক পালাবদল ঘটলেও কংগ্রেস-বিজেপি সবাই বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার বসানো প্রকল্পের বিষয়ে ঐকমত্য বজায় রাখে। কাঁটাতারের সপক্ষে ভারতীয় রাজনীতিবিদেরা যেসব বক্তব্য দিয়ে থাকেন তা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের পক্ষে ইসরাইলি নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের অনুরূপ। তবে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন সীমান্তে নির্মিত দেয়ালের চেয়ে (নির্মাণ শেষে এই দেয়ালের পুরো দৈর্ঘ্য হবে ৭৬০ কিলোমিটার) তা অনেক বড়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে নির্মিতব্য দেয়াল (যার দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১১২৩ কিলোমিটার) এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন সীমান্তে নির্মিতব্য দেয়ালের সম্মিলিত দৈর্ঘ্যরে চেয়েও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের দেয়ালের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে তার সীমান্তেও ১৮০০ মাইল জুড়ে দেয়াল নির্মাণের প্রকল্প নিয়ে এগোচ্ছে, তবে বাংলাদেশ সীমান্তেই তার এরূপ প্রকল্পে অগ্রগতি বেশি এবং ইতিমধ্যে ভারত কর্তৃক নির্মিত এই সীমানা প্রাচীর বিশ্বের সর্ববৃহৎ আন্তঃসীমান্ত দেয়াল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সীমান্তে নির্মিতব্য দেয়াল এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে নির্মিতব্য দেয়াল নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি দেশে এবং বিশ্বজুড়ে সংশ্লিষ্ট সরকার ও মানবাধিকার কর্মীরা সোচ্চার হলেও আমাদের দেশে এ নিয়ে নেই কোনও উচ্চবাচ্য। কেবল একবার ২০১০ সালের ১৫ মে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব আবদুস সোবহান শিকদার বলেছিলেন যে, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকালে ভারত অন্তত ৪৬ স্থানে
আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করেছে (দেখুন, ডেইলি স্টার, ১৬ই মে, ২০১০)। উপরোক্ত বক্তব্য প্রদানকালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব এও জানিয়েছিলেন যে, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকালে সীমান্তের জিরো পয়েন্টের ১৫০ গজের মধ্যে কোনও ধরনের কাঠামো বা নির্মাণের যে আইনগত বাধ্যবাধকতা লংঘিত হয়েছে সেটি ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে জরিপ করেও অন্তত ১২ স্থানে প্রমাণিত হয়েছে।
কাঁটাতারের প্রাচীর একধরনের বর্ণবাদিতার স্মারক
১৯৮৯ থেকে এ বিষয়ে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ৩.৭ বিলিয়ন রুপি এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হলেও পরে ধাপে ধাপে এই বরাদ্দ কয়েক গুণ বেড়ে ১০.৫ বিলিয়ন রুপিতে দাঁড়াবে বলে অনুমান করা হয়। কয়েকটি পর্যায়ে সমাপ্ত প্রায় এই কার্যক্রমে ভারত কেবল কাঁটাতারের বেড়াই নির্মাণ করেনি, বেড়া ঘেঁষে সামরিক যান চলাচলের উপযোগী রাস্তাও নির্মাণ করেছে।
এ পর্যন্ত প্রায় তিনহাজার কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন সম্পন্ন হয়ে গেছে। বেড়াগুলো তিন মিটার উঁচু করে নির্মিত। বেড়ার আশেপাশে আনুষাঙ্গিক অনেক স্থাপনা নির্মিত হবে। ভারতের তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে ২০০৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্থানীয় নাগরিকেরা এ সম্পর্কিত যেসব তথ্য প্রকাশে সরকারকে বাধ্য করেছেন তাতে দেখা যায়, দেশটি বাংলাদেশকে ঘেরাও করে ফেলার জন্য ওই সময় পর্যন্ত ৫২০৫.৪৫ কোটি রুপি অর্থবরাদ্দ শেষ করেছে এবং সর্বমোট ৩৪৩৬.৫৯ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হবে তখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে। পরবর্তীকালে ভারতীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, কাঁটাতারের প্রাচীর নির্মিত হবে সর্বমোট ৩৭৮৩ কিলোমিটার সীমান্তে।
ভারতীয় লোকসভায় সেদেশের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বিবৃতিতে দেখা যায়, কেবল ২০০৪-০৫ অর্থবছরে দেশটি বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার খাতে ২৪০৪.৭০ মিলিয়ন রুপি অর্থব্যয় করেছে। আসাম অঞ্চলে কয়েকটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া বিদ্যুতায়িতও করা হয়েছে। উলেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র যখন মেক্সিকো সীমান্তে বেড়া বা দেয়াল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেখানে দু’দফায় অন্তত দুটি আইন করা হয়। সর্বশেষ যে আইনের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয় তাহলো ‘সিকিউর ফেন্স অ্যাক্ট ২০০৬’। ২০০৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই আইন কার্যকর হয়। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্যদিয়ে নয়, স্রেফ প্রশাসনিক উদ্যোগে ভারত বাংলাদেশকে ঘেরাও করে ফেলার এইরূপ একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মেক্সিকো সীমান্তে বেড়া বা দেয়াল নির্মাণের কথিত যুক্তি ছিল মেক্সিকো থেকে আসা মাদকের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, আর ইসরাইল কর্তৃক পশ্চিম তীরে দেয়াল তৈরি করা হয় কথিত সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ করার কথা বলে। অথচ বাংলাদেশ সীমান্তে, বাংলাদেশের তরফ থেকে ভারতে এইরূপ সমস্যার কোনওটিই নেই। বরং ভারত থেকেই বাংলাদেশে ফেনসিডিল, অস্ত্র-সহ নানা ধরনের জিনিস চোরাচালান হয়ে আসে যা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কিন্তু এতদসত্তে¡ও বাংলাদেশ কখনওই সীমান্তে এইরূপ মানবতাবিরোধী অবকাঠামো গড়ে তোলার দাবি জানায়নি।
ভারত কর্তৃক প্রায় দু’ দশক ধরে কাঁটাতার দেয়ার কার্যক্রম চললেও সে বিষয়ে নীরবতা বজায় রেখেই বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা বাংলাদেশকে করিডোর দেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অথচ সীমান্তে এভাবে সর্বব্যাপক কাঁটাতারের বেড়া ও সড়ক নির্মাণ ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিরও লংঘন-১৯৭৪ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও যে চুক্তিকে আজও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দিকনির্দেশনা হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। ওই চুক্তি অনুযায়ী কোনও দেশ অপরের জন্য হুমকিমূলক সামরিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারবে না। কিন্তু ভারত স্পষ্টত প্রায় পুরো সীমান্ত জুড়ে ওই চুক্তির অতীত অবস্থান থেকে সরে গেছে। এমনকি ভারত তার বিভিন্ন সীমান্তে ইসরাইল থেকে পাওয়া গ্রাউন্ড সেন্সর টেকনোলজি ব্যবহার করছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত বর্তমান পত্রিকার (০৬.০৫.২০১১) এক সচিত্র প্রতিবেদনে বিএসএফ-এর কুচবিহার সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি অশোক কুমারের বরাত দিয়ে জানানো হয় যে, সীমান্তে তারা এমনসব থার্মাল ইমেজার ব্যবহার করছে যা রাতেও বাংলাদেশের কয়েক কিলোমিটার ভেতরে অনায়াসে নজরদারি করতে সক্ষম। ১০.১৫.২০০৬ তারিখে জি নিউজ সূত্রে জানা যায়, বিএসএফ শুধু বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারির জন্য ৯০০ হ্যান্ড-হ্যান্ড থার্মাল ইমেজার ক্রয় করছে, যে যন্ত্রের প্রতি সেটের মূল্য ২৮ লাখ রুপি। মানুষের শরীরের উত্তাপ থেকেই তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম এই যন্ত্র। এছাড়া বিএসএফ সীমান্তের জন্য ইসরাইলের তৈরি দূরপাল্লার LORROS (long-range recce and observation system) প্রযুক্তি সংগ্রহ করেছে যার সাহায্যে সীমান্তের চলিশ মাইল জুড়ে নিবিড় নজরদারি করা যায়। এরকম অন্তত ২৭ সেট রাডারভিত্তিক প্রযুক্তি কিনেছে তারা, যার প্রতি সেটের দাম দুই কোটি রুপি।
কেবল কারিগরি দিক থেকে নয়, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির অন্তর্নিহিত আকাক্সক্ষাও ভারত কর্তৃক সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ভূলুণ্ঠিত। যেখানে প্রথম অনুচ্ছেদেই ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও বন্ধুত্ব’, ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান’-এর পাশাপাশি ‘অপরের প্রতি বর্ণবাদী মনোভাব’ পোষণ না করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু হাজার হাজার মাইল জুড়ে বাংলাদেশীদের ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ মোটেই বন্ধুত্বের স্মারক নয়-একইসঙ্গে তা একধরনের বর্ণবাদী ঘৃণারও প্রকাশ। বিশ্ববাসী দেখছে, ইসরাইল অনুরূপ ঘৃণার প্রকাশ ঘটিয়েছে আরবদের প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রও একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে সীমান্তঘেঁষা মেক্সিকোর গরিব মানুষদের প্রতি।
কাঁটাতারের বেড়ার কারণে জীববৈচিত্র্যে বিপর্যয়
বর্তমান বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার কর্মীরা যেসব যুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন সীমান্ত বেড়ার বিরোধিতা করছেন তার সবগুলোই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তেও উপস্থিত। যেমন, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কারণে তিনটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ আত্মীয়-স্বজনগতভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অনুরূপভাবে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশ সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কারণে এখন হাজার হাজার পরিবার বিভক্ত। স্মরণাতীত কাল থেকে সীমান্ত এলাকার মানুষ আশপাশের গ্রামে বিয়ের মাধ্যমে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। তারা ভাবতেও পারেনি যে, একই ভাষাভাষি ও জাতিসত্তার মাঝে এরূপ একটি দেয়াল নির্মিত হবে। ফলে এসব পরিবার এখন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরূপ অস্বাভাবিক বিভক্তি তাদের অর্থনৈতিক জীবনেও দীর্ঘস্থায়ী বিপন্নতা তৈরি করেছে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই কাঁটাতারের বেড়া বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনকেও বিভক্ত করবে-যা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিবেশবাদীদের মাঝে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে আনুষঙ্গিক উপাদান পরিবহনের জন্য সুন্দরবনে ব্যাপক সড়ক অবকাঠামোও নির্মাণ করতে হবে। বেড়া এবং সড়ক অবকাঠামোর ফলে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য নিশ্চিতভাবেই হুমকির মুখে পড়বে। বাঘ-সহ অনেক বিপন্ন প্রাণী কাঁটাতারের বেড়ার ফলে বিচরণভূমি হারিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। উলেখ্য, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের আগে বা পরে বাংলাদেশ কখনও এই প্রকল্পের পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কোনও উদ্যোগ নেয়নি। অথচ আমাদের দেশে পরিবেশবিষয়ক একটি অধিদপ্তর রয়েছে এবং সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য হিসেবে নির্বাচিত করার নানা আয়োজনও লক্ষ করা যাচ্ছে ইদানীং। কাঁটাতারের বেড়া খুলনা-সাতক্ষীরার সুন্দরবন সন্নিহিত অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক নৃ-গোষ্ঠী, যেমন বাওয়ালী, মৌয়ালদের রুটি-রুজিতেও বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। কারণ এসব জনগোষ্ঠী স্মরণাতীতকাল থেকেই সুন্দরবনের প্রাণসম্পদের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে।
কাঁটতারের বেড়া: সমরবাদী মনস্তত্তে¡র ফল
বলাবাহুল্য, এরূপ অপরিণামদর্শী ও মানবিকবিপর্যয় সৃষ্টিকারী প্রকল্পের উৎস বরাবরই হয়ে থাকে সামরিক-আমলাতান্ত্রিক মনোভাব থেকে। যে কারণে দেখা যায়, বিশ্বে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সবচেয়ে বেশি আলোচিত তিনটি সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণকারী দেশই (ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) একই ধাঁচের এবং পরস্পর নানা সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ। লক্ষণীয় যে, তাদের মাঝে যত ধরনের সহযোগিতামূলক প্রকল্প রয়েছে তার সবগুলোই সামরিক ধাঁচের। অর্থাৎ এই তিনটি দেশই যাবতীয় সমস্যা ও সম্ভাবনাকে সামরিক চোখে দেখে থাকে। অথচ বাংলাদেশের মতো প্রায় পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ সীমান্তে অতি ব্যয়বহুল বেড়া নির্মাণ থেকে কল্পিত নিরাপত্তা খোঁজার যে চেষ্টা ভারত করছে তার সর্বোত্তম বিকল্প হতে পারতো দুদেশের মাঝে ন্যায্য সম্পর্কের মধ্যদিয়ে বন্ধুত্ব ও আস্থার মনোভাব সৃষ্টি। কিন্তু ভারতের শাসনকেন্দ্রে ঝেঁকে বসা দক্ষিণপন্থী সামরিক-আমলাতান্ত্রিক মনোভাব সে পথে যাবে বলে মনে হয় না।
*লেখকবৃন্দ: ট্রানজিট স্টাডিগ্র“প সদস্য
অযান্ত্রিক 2012