দেয়াল
এখন নিজের হাত বিশ্বস্ত নয়
অদৃশ্য দেয়াল গড়ে দিয়েছে কেউ
সে—কি ঈশ্বর পরম মমতার প্রকৃতি
না—কি সৃজন মানুষেরই
রক্তে অমানবিকতা
বিশ্বাস হন্তার অপর নাম মানুষ
দূরে সরিয়ে দিচ্ছে নিজেকে
একি অপূর্ব প্রতিশোধ
ফিরে আসুক মানুষ
তার বিশ্বস্ত হাতের কাছে
পুনর্বার
ফেরার মানুষ অচেনা তার নিজের কাছেই…
অন্তর্ধান
স্বপ্ন থেকে আসে যে হন্তারক
অহর্নিশ তাকে আমি
আটকাই মায়াজালে
আছি এখন লকডাউনে
হিজিবিজি হিজিবিজি
মস্তিষ্কের কোষে কোষে
সুদূর বার্তা বয়ে যায়
রটে যায় গৃহবন্দিত্বের
অসময়ে
কার্পণ্য নেই তবু
অন্তর্জাল বয়ে যে স্রোত
বহমান
আপন মুখচ্ছবি
অন্যের আয়নায়
কদাকার
এতোটা খারাপ কোন দুঃস্বপ্নও
বুঝি উত্থিত শিশ্মের হঠাৎ
অবদমন পারে না ঠেকাতে
ভালো সেই গুহার রূপক
শূন্যতায় সমর্পন নিজেকে
হয়ে যাওয়া অদৃশ্য
চারপাশ থেকে
চেতনা অন্তর্ধান হও…
লুপ্ত হও…
পতনোন্মুখ পাখি
পরিবর্তনে দৃশ্যের পর দৃশ্য
যে সঙ কেবলি নেচে যায়
কখনো ছায়া কখনো উপযাজক
মূলের সে কেউ নয় আসলে
ক্রমাগত শূন্যতার মাঝে
আরো শূন্য হয়ে যাওয়া
সেধোতে থাকা গভীরে
আরো গভীরে…
ঘটকের যুক্তি—তর্কো—গপ্পো
মস্তিষ্কে তোলপাড় করতে করতে
অবশেষে নেমে এলে খাদে
ফিরে আসে ঘূর্ণিবাত্তায়
লেফটরাইট লেফটরাইট…
চৌকষ আঙুলের ডগায় যে মার্বেল
চিনে নিতে পারে তার লক্ষ্যবিন্দু
সে নিশ্চয়ই পারঙ্গম
শুনছি দূরে কেউ গাইছে…সব ঝুট হ্যায়
আলবাত ঝুট হ্যায়
চেতনায় ফিরে আসে ঋত্বিক
পঁচে গেছি, পঁচে গেছে
বাঙালি বুদ্ধিজীবী…আলবাত…
বিধ্বস্ত ল্যাম্পপোস্ট
বাড়তে থাকে আঁধার সেই সাথে রাতও
পাল্লা দিয়ে বাড়ে সময়, একঝাঁক বুনো অস্বস্তি
ক্রমশ গ্রাস করে, করে দেয় নিস্তেজ স্নায়ুগুলো
এই বুঝি আরেক আপনজন
চেনা জানা ভূগোলে ইতি টানলেন জীবনের
জানালা থেকে দূরের ল্যাম্পপোস্ট বড্ড বিধ্বস্ত
প্রকৃতিও ক্রন্দনরত আড়াল দিয়ে রেখেছে কাকে যেন
আর কত মৃত্যু…আর কত যন্ত্রণা…
কতটা পাল্টাবে পৃথিবী নাকি মানুষ নিজেই
অপার শূন্যতা মনে মনে নামতা শেখায়…
কীনব্রিজে বিকেলের রোদ
চলমান রিকসা পেডেলে রোদগুলো ধাক্কা খেতে খেতে
আত্মহত্যা করছিল সুরমার জলে
ঢেউয়ে স্থবির নামতা গুণছিল কে যেন
ছুটে যাচ্ছিল শেষ বিকেলের ট্রেন কীনব্রিজ থেকে
মাত্র কয়েক মিনিট
আজও দেখতে পাই
কীনব্রিজের উপর থেকে
বিকেলের শেষ ট্রেন
অপেক্ষমান এক প্রেমিকার আর্ত—চিৎকার
উপেক্ষা করে
ছুটে চলছে
অবিরাম
অজানা গন্তব্যে…